সামিউল ইসলাম পোলাক বাংলাদেশের একজন তরুণ জনপ্রিয় বাচিকশিল্পী। দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে তাঁর অনবদ্য স্বর দিয়ে তিনি শ্রোতাদের মন্ত্রমুগ্ধ করে বাস্তবতাকে ছাড়িয়ে গেছেন এবং কবিতা আবৃত্তিকে একটি ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। রবীন্দ্র কাব্যে আবৃত্তিতে তার অসামান্য অবদানের জন্য তিনি বাংলাদেশে এবং এর বাইরেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা, সম্মান এবং খ্যাতি অর্জন করেছেন। শান্তিনিকেতনে পরমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পোলাক সম্পূর্ণ মহিমায় রবি ঠাকুরের কবিতা আবৃত্তি আয়ত্ত করেছেন। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে তাঁর সূক্ষ্মতা এবং বাগ্মীতা তাকে বহু প্রশংসা পদক এনে দিয়েছে যার মধ্যে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহের স্বর্ণপদক প্রাপ্তি তাঁর সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতার প্রতীক হিসাবে দাঁড়িয়েছে। পোলাক কাব্যকে বিশ্বব্যাপী দর্শকদের কাছে উপস্থাপন করার জন্য বিশ্বের নানা প্রান্তে ভ্রমণ করেছ এবং বাংলাদেশের জন্য গর্ব ও সম্মান বয়ে এনেছেন। বাংলাদেশ থেকে জাতীয় স্বর্ণপদকের পাশাপাশি, তিনি “দ্য বেঙ্গল’স প্রাইড অ্যাওয়ার্ড”, “মিনার্ভা রবীন্দ্র পদক”, “কবি নজরুল পদক ২০২২”-এও সম্মানিত হন। অপরদিকে স্বপ্নীল সজীব তরুণ প্রজন্মের শিল্পী হিসেবে শ্রোতাদের কাছে এরই মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন। মাত্র ৫ বছর বয়সে মঞ্চে তাঁর গান গাওয়া শুরু। তাঁর খালা, উচ্চাঙ্গ সংগীতশিল্পী লুত্ফর নাহার লতার কাছে তাঁর গানের হাতেখড়ি হয়। এরপর ছায়ানটে রবীন্দ্রসংগীতে কোর্স করেছে, তালিম নিয়েছেন বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার কাছে। লোকসংগীত গেয়ে ১৯৯৮ ও ২০০০ সালে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন। ২০১১ ও ২০১৩ সালে রবীন্দ্র সম্মেলনে প্রথম স্থান অর্জন করেন। ২০১২ সালে ‘চ্যানেল আই নব গান নব প্রাণ’ প্রতিযোগিতায় টপ ফাইনালিস্ট হয়েছিলেন। ওই বছরই প্রকাশ পায় তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘টেগোর ট্রেজারি’ এবং কলকাতা থেকে দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ‘ভাঙা-গড়ায় রবীন্দ্রনাথ’। এছাড়া স্বপ্নীল সজীব বাংলাদেশ-ইন্টারন্যাশনাল ফেম অ্যাওয়ার্ড ২০২২’ অনুষ্ঠানে ২০২১ সালের শ্রেষ্ঠ সংগীতশিল্পী হিসেবে সম্মাননা গ্রহণ করেন।
সজীব জানান সঙ্গীতের জগতে এমন পথচলার জন্য তাকে নানা সময় নানা সংগ্রাম করতে হয়েছে এবং করে যেতে হচ্ছে। কখনো পরিবারের সাথে, কখনো সমাজের সাথে, এমনকি কখনো নিজের সাথেই নানা যুদ্ধ করতে হয়েছে। বর্তমান প্রজন্ম রবীন্দ্র, নজরুল এবং পঞ্চকবিদের গান নিয়ে খুবই কম আগ্রহ বোধ করে। এই প্রজন্মের কাছে এ ধরনের গান পৌঁছে দেয়ার তাড়না থেকেই তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীতের সাধনায় নিজেকে নিবেদন করেছেন। তিনি জানান, এখনো নানা সময় নানা ধরনের বিড়ম্বননায় পরতে হয়। অনুষ্ঠান করতে গিয়ে হয়তো নিজের মতো করে গাওয়ার সুযোগ পাননা, আয়োজকরা সেই কিছু ধরাবাধা গান করতে বলেন, কিংবা এমন প্রত্যাশা রাখেন যা তাঁর ব্যক্তিত্ব ও চর্চার পরিপন্থী। এর সাথে যোগ হয়েছে করোনা মহামারী, এই সব কিছু মিলিয়েই অনেক বাঁধার মুখোমুখি হয়েই তিনি নিজের সাধনা চালিয়ে যাচ্ছেন। আশা করছেন, এখন সবকিছু কাটিয়ে যে ধারায় আবার সবকিছু শুরু হয়েছে, তা বজায় রাখলে সামনে আরও ভালো ফলাফল আসবে। পোলাক বলেন, নিজের যাত্রাপথে তাকে খুব বেশি বাঁধার সম্মূখীন হতে হয়নি। ছোটবেলায় আবৃত্তি শুরু করার পর পড়াশোনা এবং অন্যান্য কাজের ভীড়ে একসময় এই চর্চা হারিয়ে যেতে বসেছিল। তারপর আবার শুরু করে আজকের এই অবস্থানে আসা। সে জন্যেই অনেকসময় পোলাক নিজেকে দুর্ঘটনাবশত হওয়া শিল্পী হিসেবে পরিচয় দেন। সে ব্যাপারে আবার আপত্তি জানিয়ে সজীব বলেন, পোলাক নিজের প্রতিভা এবং দীর্ঘসময়ের চেষ্টার ফলেই এক অসাধারাণ শিল্পী হয়ে উঠেছেন। এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং সাধনার ফসল।
বাচিকশিল্পী হিসেবে পোলাক রবীন্দ্রনাথের বাইরে আর কিছু কেন আবৃত্তি করতে চান না, এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, যুগের তালে গা ভাসিয়ে দেয়া খুবই সহজ। কিন্তু কাউকে না কাউকে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির ধারক হয়ে তা বয়ে নিয়ে যেতে হবে। এছাড়া, রবীন্দ্রনাথের কথা, শব্দ, মানুষের মাঝে নতুন বোধ সৃষ্টি করে, তাদেরকে আলোকিত করে। তিনি চান, তাঁর শ্রোতারা যাতে রবীন্দ্রনাথের বাণীর মাধ্যমেই আত্মোপলব্ধির সুযোগ পান। এখানে আরেকটি বড় ব্যাপার হচ্ছে, মানুষ কোন সাহিত্যের মাঝে নিজেকে খুঁজে পায় তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পোলাক আধুনিক যুগের সাহিত্যের চাইতে, চরিত্রগুলোর চাইতে, রবীন্দ্র সাহিত্যেই নিজেকে বেশি করে খুঁজে পান। বর্তমানে দাঁড়িয়েও অতীতের সেই সময়ের মাঝে তিনি নিজেকে আরও প্রবলভাবে আবিষ্কার করেন। এভাবে নিজের চর্চার মধ্যে, পঠনের মধ্যে নিজেকে খুঁজে পাওয়া তাঁর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সজীবও গলা মিলিয়ে বলেন, রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁরও এক আত্মিক যোগ রয়েছে। তবে মজা ব্যাপার হল, তিনি দুবার জাতীয় পুরষ্কার কিন্তু পেয়েছেন লোকগীতিতে। এছাড়া ইন্টারন্যাশনাল ফোক ফেস্টিভালে তিনি সত্তর হাজার দর্শকের মাঝেও ফোক গান গেয়েছেন। কিন্তু দর্শকের কাছে, আপনজনদের কাছে, তাঁর রবীন্দ্রসঙ্গীতের বরাবরই আলাদা কদর রয়েছে। সজীব বলেন, তিনি কিছু ভালো গান করে যেতে চান যা মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে, তাঁর নিজের প্রজন্মের শিল্পীদের অনুপ্রাণিত করবে। এখানে রবীন্দ্রনাথের পাশাপাশি অন্য কবিদের কথাও তিনি নিজের কন্ঠে ফুটিয়ে তুলতে চান। এর বাইরে তিনি নিজের মৌলিক সৃষ্টির দিকেও এখন মনোযোগ দিতে চান এবং সর্বোপরি নিজের কাজের মাধ্যমে বাংলা ভাষাটাকে আরেকটু সমৃদ্ধ করে যেতে চান।
সামিউল ইসলাম পোলাক এবং স্বপ্নীল সজীব ব্যক্তিগতভাবে খুবই কাছের দুজন মানুষ। তাদের মাঝে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধে অনুপ্রাণিত এক ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সবসময় বিরাজমান। সজীব জানান, এক দশকের বেশি সময় ধরে দুজন একসাথে থেকেছেন। পোলাক বড় ভাই এবং শিক্ষকের মতো তাকে সবসময় দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন, কোথায় গিয়ে কীভাবে কথা বলতে হবে, কী ধরনের ব্যবহার করতে হবে তা ধরে ধরে শিখিয়েছেন। পোলাক নিজেও বলেন, সজীব বয়সে অনেক ছোট হলেও গায়ক স্বপ্নীল সজীবের প্রতি তাঁর আগাধ শ্রদ্ধা রয়েছে। তাঁর গানের যে ব্যপ্তি, যে পরিধি এবং শুধু উপমহাদেশ নয়, বিশ্বব্যাপী সে যে জায়গা অর্জন করেছে, তা নিদারুণ গর্বের ব্যাপার। ঠাট্টাচ্ছলে নিজেকে একটু অলস, একটু ঢিমেতালের দাবী করে পোলাক বলেন, স্বপ্নীল সজীব থাকলে যেকোনো কাজে তিনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। সজীব সমস্ত কাজ সহজেই সামলে নিয়ে পোলাককে নিস্তার দিতে পারেন।
এই দুই অত্যন্ত প্রতিভাবান শিল্পী শিল্পচর্চার পাশাপাশি নানা মানবতামূলক কাজেও নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন। স্বপ্নীল সজীব “স্বপ্নীল ফাউন্ডেশন” নামে নিজস্ব একটি সংগঠনের মাধ্যমে পথশিশু, সুবিধাবঞ্চিত এবং বস্তির শিশুদের গান শেখানোর কাজ করেন। পিছিয়ে পড়া শিশুদের বাংলাদেশের সাথে, এদেশের সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে অত্যন্ত ছোট পরিসরে কাজ শুরু করে বর্তমানে এই সংগঠন প্রায় পাঁচ বছর ধরে এটি কাজ করে যাচ্ছে। এদেশের দীর্ঘ সময়ের সংস্কৃতির একটি বড় বৈশিষ্ট্য হল এর অসাম্প্রদায়িক সহাবস্থান। কিন্তু বর্তমানে সাম্প্রদায়িকতার একটি সুর নানা অপকর্মে এবং অপচেষ্টায় ফুটে উঠছে। পোলাক বলেন, সকল ধর্ম, বর্ণের মানুষের সহাবস্থান এদেশের সবসময়ের ঐতিহ্য। এখানে এত ভেদাভেদ কখনো ছিল না। বরং আমরা যদি দেশ, দশ এবং দলের ঊর্ধ্বে গিয়ে ভাবতে পারি তাহলে দেখবো আমরা সবাই এক বিশাল পৃথিবীর সমান অংশ। এই ঘটনাগুলো ধর্মীয় না যতটা, তার চেয়ে বেশি দুর্বলের প্রতি সবলের অত্যাচার। সজীব যোগ করেন, মানুষের মাঝে এই একাত্মতার বোধ সৃষ্টি করার জন্যেই সংস্কৃতির চর্চা দরকার। সংস্কৃতির মাধ্যমেই মানুষের মাঝে উদারতা জন্ম নেয়, ভালোবাসা জন্ম নেয়। তাঁরা যখন বড় হয়েছেন, তখন এক সুস্থ সংস্কৃতির মধ্যে বড় হয়েছেন বলেই কখনো কোনো সংকীর্ণতা তাদের মাঝে জন্ম নেয়নি। বরং সকল ধর্মের মানুষের সাথে একাত্ম হয়ে সকল উৎসব উপভোগ করেছেন। এমনকি তাঁরা যে রবীন্দ্রনাথের কবিতা চর্চা করেন কিংবা যে সুর এবং রাগে সঙ্গীতচর্চা করেন, সবই তো তথাকথিত হিন্দুস্থানি সংস্কৃতির অংশ। শুধুমাত্র নিজেদের ঐতিহ্যগত মুক্তচিন্তা আছে বলেই তাঁরা এসব ধ্যান ধারনা ত্যাগ করে সকল আয়োজনে এবং উদযাপনে প্রাণ খুলে শরিক হতে পারেন। তিনি আরও বলেন, একটি নির্দিষ্ট চক্রই সকল দেশে এধরনের সাম্প্রদায়িক অপকর্ম ঘটিয়ে থাকে। আমাদের উচিৎ আধুনিক মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে মানুষকে এ ব্যাপারে সচেতন করে তোলা। এই দেশ আমাদের সবার রক্তের দামে অর্জন করা। তাই সব ভেদাভেদ দূর করেই দেশের জন্য কাজ করতে হবে। পোলাক বলেন, এ ধরনের সহনশীলতা শিক্ষা পরিবার থেকেই আসে। সব মানুষই এক সময় অন্ধকারে থাকে, তার উত্তরণের জন্য তাকে শিক্ষা দিতে হয়, জ্ঞান দিতে হয়, সংস্কৃতির সংস্পর্শে আনতে হয়। তখনই একজন মানুষের চিন্তার ক্ষুদ্রতা দূর করা সম্ভব।
শান্তিনিকেতনের অভিজ্ঞতা নিয়ে সজীব বলেন, সেখানকার শুধু শিক্ষক নয়, প্রকৃতিও শিক্ষা দেয়। বিশেষ করে একজন বাংলাদেশী শিল্পী হিসেবে তাঁর জন্যে রবীন্দ্রচর্চার এই অভিজ্ঞতা খুবই গর্বের। কারণ রবীন্দ্রনাথকে আমাদের অর্জন করে নিতে হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের আগে যেখানে রবীন্দ্রচর্চা নিষিদ্ধ ছিল, সেখানে আমারা স্বাধীনতার পাশাপাশি সাহিত্যচর্চার অধিকারকেও ছিনিয়ে এনেছি। এছাড়া তিনি আরও যোগ করেন, আমাদের দেশে হয়ত শান্তিনিকেতনের মতো প্রতিষ্ঠান নেই, কিন্তু তবুও আমরা নিজেদের জায়গা থেকে শুদ্ধভাবে রবীন্দ্রচর্চা করে যাচ্ছি। যেখানে পশ্চিমবঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সুর নিয়ে, গানের দৃশ্যায়ন নিয়ে এমন অনেক নিরীক্ষা হচ্ছে যা হয়ত রবীন্দ্রনাথের ভাবধারার সঙ্গে বেমানান। সেখানে আমরা এদেশে বেশ পরিশীলিতভাবে রবিন্দ্রচর্চার ধারাটি বজায় রাখছি। আর শান্তিনিকেতন এবং রবীন্দ্রভারতী সজীবের জন্য বরাবরই একটি তীর্থস্থানের মতো, যেখান থেকে তিনি অনেক কিছু শিখে আসতে পারেন, যেখানকার নির্যাসে অনুপ্রাণিত হতে পারেন। পোলাকও নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, শান্তিনিকেতন রবীন্দ্রনাথের নিজের হাতে তৈরি করা জায়গা। তাই এর মাহাত্ম্য অসীম এবং এর কার্যক্রম, আচরণ সবকিছুতেই বারবার রবীন্দ্রনাথ প্রতিফলিত হন। রবীন্দ্রনাথের প্রকৃতিপ্রেমকে অনুসরণ করেই এখানে শ্রেণিকক্ষের বাইরের শিক্ষাকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়। কুষ্টিয়া কিংবা শাহজাদপুরের কুঠিবাড়িতে গেলেও এমনই প্রকৃতির সান্নিধ্য উপলব্ধি করা যায়। শান্তিনিকেতনে বসেই যেহেতু উনার প্রকৃতির অনেক নিখুঁত বর্ণনাগুলোর সৃষ্টি, সে জন্যেই রবীন্দ্রনাথকে চিনতে হলে, তাঁর প্রকৃতিপ্রেমকে উপলব্ধি করতে হলে তাঁর তৈরি করা সেই আশ্রমেই যেতে হবে। সজীব বলেন, ওখানকার সংস্কৃতি একটা মানুষকে কতটা সহজ পথে চলতে হবে এই শিক্ষাটা দেয়। সেজন্যেই সেখানকার শিক্ষা, ভালোবাসার জন্য তাঁরা আজীবন নিজেদের ভাগ্যবান মনে করবেন।
মানুষ প্রতিনিয়ত নতুন নতুন স্বপ্ন দেখে, নতুন কিছু অর্জন করতে চায়। জীবনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জনের পরও আরো অনেক অধরা ইচ্ছা কাম্য রয়ে যায়। পোলাক জানান, তাঁর প্রপিতামহ অখন্ড ভারতে তাফসীলসহ সমগ্র কোরআন শরীফ অনুবাদ করেছিলেন। বর্তমানে এটি ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকেও প্রকাশিত হয়। তিনি তাঁর প্রপিতামহের এই কাজগুলোকে নিজের কন্ঠে কোনো মাধ্যমে প্রকাশ করতে চান। নিজেদের পূর্বপুরুষের উত্তরাধিকারকে এই কাজের মাধ্যমে তিনি সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান। আর এর বাইরে তাঁর আজীবনের স্বপ্ন হল সবসময় সুখী থাকা। অবসাদ, বিষাদের মতো সব নিরানন্দ অনুভূতিকে পাশে সরিয়ে সবসময় আনন্দে থাকাই তাঁর জীবনের লক্ষ্য। সজীব বলেন, তিনি স্বপ্ন দেখেন, তিনি একদল ভালো মানুষ তৈরি করবেন। তিনি যে শিশুদের নিয়ে কাজ করেন তাদেরকে তিনি আলোর পথ দেখাতে চান। তাঁর আজন্ম লালিত স্বপ্ন, এসব নিগৃহীত, অবহেলিত এসব শিশুদেরকে তিনি আলোকিত করতে চান। উপমহাদেশের বাইরে, বৃহত্তর বিশ্বের কাছে বাংলা গানকে পৌঁছে দেয়া তাঁর আরেকটি বড় স্বপ্ন। হলিউড বা এমন অনেক বড় মঞ্চে তিনি ভিন্ন ভাষাভাষীদের কাছে বাংলা গান তথা বাংলাদেশকে উপস্থাপন করতে চান। সেই লক্ষ্য নিয়েই তিনি নিজের মতো করে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এই বাংলা গান দিয়েই স্বপ্নীল সজীব স্মরণীয় হয়ে থাকতে চান। বাংলা গানের ভেতর দিয়ে, বাংলা গানকে বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দিয়ে তিনি মানুষের মাঝে বেঁচে থাকতে চান। সামিউল ইসলাম পোলাক বলেন, তিনি মানুষের ভালোবাসায় এবং নিজের বিশেষত্বে স্মরণীয় হতে চান। নিজের পরিশ্রম, প্রত্যয় এবং অধ্যবসায় দিয়ে নিজেকে তিনি অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান এবং সেই কাজের মধ্য দিয়ে, ভালোবাসার মধ্য দিয়ে স্মরণীয় হয়ে থাকতে চান। তাঁরা দুজনই নিজ নিজ ক্ষেত্রে ইতোমধ্যে নিজেদের অনন্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। এ কথা অকপটে বলা চলে যে, তাদের হাত ধরেই তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আমাদের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি সঞ্চালিত হবে, শেকড়ের সাথে তরুণদের যোগাযোগ সুদৃঢ় হবে।
লিখেছেন – রোমান উদ্দিন